জুরাইনে পুলিশের ওপর হামলার মামলায় দুই আইনজীবীসহ পাঁচজনকে রিমান্ডের পাঠানোর আদেশ কেন বাতিল করা হবে না, তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেছেন হাইকোর্ট। একইসঙ্গে মামলার সব নথি তলব করেছেন আদালত।
আগামী রোববারের মধ্যে নথি আদালতে দাখিল করতে বলা হয়েছে। ওইদিন মামলার পরবর্তী শুনানির দিন ধার্য করেছেন আদালত।
বৃহস্পতিবার (৯ জুন) হাইকোর্টের বিচারপতি মো. মজিবুর রহমান মিয়া ও বিচারপতি খিজির হায়াতের সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ এ আদেশ দেন।
রিমান্ড আদেশ দেওয়া ঢাকার অতিরিক্ত মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেটের বিচারিক ক্ষমতা কেড়ে নিতে বুধবার (৮ জুন) হাইকোর্টে রিট দায়ের করেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী সৈয়দ ফজলে এলাহি। তবে রিট ছাড়াও বিষয়টি নিয়ে শুনানির জন্য আদালতের দ্বারস্থ হন কয়েকশ আইনজীবী।
এদিন আদালতে রিটের শুনানিতে অংশ নেন, সিনিয়র আইনজীবী জয়নুল আবেদীন, ব্যারিস্টার এএম মাহবুব উদ্দিন খোকন, ব্যারিস্টার রুহুল কুদ্দুস কাজল, ব্যারিস্টার অনিক আর হক। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন অ্যাটর্নি জেনারেল এ এম আমিন উদ্দিন, অতিরিক্তর অ্যাটর্নি জেনারেল মেহেদী হাছান চৌধুরী ও এসকে মোর্শেদ।
আদালতের রিটে সমর্থনে আওয়ামী লীগ, বিএনপি সমর্থক কয়েকশ আইনজীবী আদালতের ভেতরে অবস্থান নেন। দুইপক্ষের শুনানি নিয়ে আদালত রুল জারির পাশাপাশি মামলার নথি তলব করে আদেশ দেন।
এর আগে রাজধানীর জুরাইনে ঘটনায় দুই আইনজীবীকে রিমান্ডে নেওয়ায় বিচার বিভাগীয় তদন্ত চেয়ে বৃহস্পতিবার (৯ জুন) সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী সৈয়দ ফজলে এলাহীর পক্ষে অপর আইনজীবী এবিএম শিবলী সাদেকীন হাইকোর্টের সংশ্লিষ্ট শাখায় এ আবেদন করেন। সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী অ্যাডভোকেট সুবীর নন্দী দাস আবেদনের বিষয়টি জাগো নিউজকে নিশ্চিত করেন।
আবেদনে ঢাকার অতিরিক্ত চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট তোফাজ্জল হোসেনের ক্ষমতা কেড়ে নেওয়া ছাড়াও দুই আইনজীবীর রিমান্ড বাতিল চাওয়া হয়েছে এবং তিন পুলিশ সদস্যকে মারধরের ঘটনায় বিচারবিভাগীয় তদন্ত চাওয়া হয়েছে।
গত মঙ্গলবার (৭ জুন) জুরাইন রেলগেট এলাকায় রাস্তার উল্টো দিক থেকে আসা মোটরসাইকেল আরোহীকে আটকে কাগজপত্র দেখতে চাওয়ায় ট্রাফিক সার্জেন্টসহ তিন পুলিশ সদস্যকে মারধর করা হয়। আহতরা হলেন- ট্রাফিক সার্জেন্ট আলী হোসেন, ট্রাফিক কনস্টেবল সিরাজুল ইসলাম ও শ্যামপুর থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) উৎপল দত্ত অপু।
জানা যায়, সকাল ৯টার দিকে জুরাইন রেলগেট সড়কের উল্টোদিক দিয়ে স্বামী ইয়াসিনের সঙ্গে মোটরসাইকেলযোগে আসছিলেন অ্যাডভোকেট নিশাত। এসময় সার্জেন্ট আলী হোসেন ও ট্রাফিক কনস্টেবল সিরাজ তাদের গতিরোধ করেন। নিশাত নিজেকে অ্যাডভোকেট পরিচয় দিয়ে সার্জেন্ট আলী হোসেনের সঙ্গে তর্কে লিপ্ত হন। এক পর্যায়ে ইয়াসিন মোটরসাইকেল থেকে নেমে সার্জেন্ট আলী হোসেনকে ধাক্কা দেন। এসময় অ্যাডভোকেট নিশাত চিৎকার শুরু করলে পাঠাও ও অটোরিকশাচালকরা সার্জেন্ট আলী হোসেনের ওপর হামলা করেন।
এ ঘটনায় মঙ্গলবার রাতেই শ্যামপুর থানায় তিনজনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাত সাড়ে ৪০০ জনের বিরুদ্ধে মামলা করেন আহত ট্রাফিক সার্জেন্ট আলী হোসেন।
পরদিন বুধবার এ ঘটনায় দুই আইনজীবীসহ গ্রেফতার পাঁচজনের তিনদিন করে রিমান্ড মঞ্জুর করেন আদালত। ঢাকার অতিরিক্ত চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট তোফাজ্জল হোসেন তাদের রিমান্ড আদেশ দেন।